ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা
কলকাতা: আমাদের ঠাকুরের প্রসাদ এর মধ্যে অন্যতম একটি বিশেষ ধরনের প্রসাদ হলো মিছরি। এটি মূলত ছোট ছোট আকৃতির দেখতে হয়। এছাড়াও মিছরি বড় আকৃতিরও দেখতে হয়। অনেক সময় ভেঙ্গে এগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও রান্নার কাজেও অনেক সময় চিনির পরিবর্তে মিছরি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি এমন এক ধরনের খাদ্য উপাদান, যা মুখে প্রবেশের সাথে সাথেই এক ধরনের মিষ্টি স্বাদ অনুভূত হয়। যে কারণে মিছরি ছোট থেকে বড় সকলেরই প্রায় পছন্দের একটি খাদ্য। তবে এই মেছরির বহু স্বাস্থ্য গুনাগুন আছে, যা বহু রোগের ঔষধি হিসেবে চিকিৎসা করে থাকে। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে মিছরিকে ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে।
ভারতের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে মিছরির জলের অনেক উপকারিতা রয়েছে। মিছরির জল যে শুধু খেতে ভালো তাই নয়, মিছরির জলে শরীর ঠাণ্ডা হয়। গরমকালে এই জল খাওয়া খুবই উপকারী। বাজারে কিনতে পাওয়া নামী কোম্পানির কার্বোনেটেড কোল্ড ড্রিংক না খেয়ে মিছরির জল খান। এটি প্রচণ্ড গরমে আপনার শরীর শীতল করবে। মিছরি গুঁড়ো করে সেটা জলে মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
ওজন কমাতে :
বর্তমান সময়ে ওজন বৃদ্ধি একটি বড় সমস্যা। তবে আপনি যদি এই সমস্যার সম্মুখীন হন তবে চিন্তা করতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনি চিনি ব্যবহার করার পরিবর্তে মিছরি ব্যবহার করতে পারেন। মৌরি দিয়ে মিছরি মিশিয়ে গুঁড়ো করে যদি রেখে দেওয়া যায় এবং নিয়মিত এগুলি যদি সেবন করা যায় তাহলে তা শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এছাড়াও আপনি যদি চান মিছরি পুরোপুরি ব্যবহার করে ওজন কমাতে, সেক্ষেত্রে রান্নায় ব্যবহার করুন।
হজমে সহায়ক :
হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে চিনির বদলে খাদ্যে মিছরির ব্যবহার উপকারী বলে বিবেচিত হয়। মৌরি দিয়ে মিছরি খাওয়ার পরে যদি খাওয়া যায় তাহলে তা হজমের ব্যবস্থাকে আরও উন্নতি করে। এছাড়াও মিছরিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা খাদ্য হজমে সহায়তা করতে পারে। এই কারণে আমরা বলতে পারি যে, হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে দুপুর এবং রাতের খাবার খাওয়ার পর মৌরি মিছরি একসাথে গ্রহণ করুন।
রক্তাল্পতা নিয়ন্ত্রণে :
রক্তাল্পতার মতন গুরুতর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল মিছরি। মিছরি দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখুন। এটি শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। অনেকক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরির ক্ষেত্রে ও রক্তাল্পতার চিকিৎসায় মিছরি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
শক্তি বৃদ্ধিতে :
মিছরি হলো চিনির অপরিশোধিত রূপ। যে কারণে চিনিতে প্রচুর পরিমাণে সুক্রোজ পাওয়া যায়, যা মিছরি তেও পাওয়া যায়। এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি উৎপাদনের কাজ করে। এই কারনে আমরা বলতে পারি যে, মিছরি ব্যবহার করার ফলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া যায় তা প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে, যারা ব্যায়াম করে অনেক সময় ব্যায়াম করার পরে মিছড়ি ভেজানো জল খেয়ে থাকেন।
ডায়েরিয়া থেকে মুক্তি :
ডায়েরিয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ১০০ মিলি লিটার মিছরি, ১০ গ্রাম ধনেগুঁড়ো, ১০০ মিলি লিটার জলে মিশিয়ে নিয়ে প্রত্যেকদিন তিনবার পান করুন। এটি ব্যবহার করার ফলে শীঘ্রই ডায়েরিয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এবং শরীর খুব বেশি দুর্বল হবে না এবং এটি পেট ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করবে।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া কমাতে :
শরীর যদি ভেতর থেকে অত্যধিক শুষ্ক হয়ে যায় এক্ষেত্রে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার মতন সমস্যা ছোট থেকে বড় প্রায় অনেকেরই দেখা যায়। এই সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে একটি উপকারী খাদ্য উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় মিছরি। এটি শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা এবং শীতল করতে, তাপের প্রভাব গুলি কে দূরে রাখতে সহায়তা করে। নাক থেকে রক্ত পড়ার সমস্যা যে কেবল গরমকালেই হয় তা নয়, এটি যে কোন সময় হতে পারে। মূলত দেহের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে এই সমস্যা দেখা যায়।
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে :
মিছরির ব্যবহার রক্তাল্পতার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। মূলত আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে মিছরির মধ্যে থাকা রক্তাল্পতার সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়ার বিশিষ্ট উপাদান গুলি সম্পর্কে বলা হয়েছে। একইভাবে রক্তাল্পতার সমস্যার পাশাপাশি এটি শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। তাই যদি প্রত্যেকদিন নির্দিষ্ট পরিমাপে এটি গ্রহণ করা যায় তাহলে এটি রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
মুখের আলসার নিরাময়ে :
মুখের ভেতর হওয়া যেকোনো ধরনের ঘা বা আলসারের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি দৈনিক মিছরি গ্রহণ করতে পারেন। এর জন্য সমপরিমানে মিছরি এবং সবুজ এলাচ নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। এই প্রক্রিয়াটি দৈনিক ব্যবহার করার ফলে খুব শীঘ্রই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।
Publish By Abanti Roy
Get Current Updates on, India News, India News sports, India News Health along with India News Entertainment, and Headlines from India and around the world.